Skip to content

📌 এমওইউ সাইনিং এবং ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিপিএস) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিষয়ক বাংলা সংবাদপত্রের অনুচ্ছেদ

দৈনিক যুগান্তর । সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১

রাজউকের ইসিপি সিস্টেমের উদ্বোধন

৬ মাসের মধ্যে কার্যক্রম শতভাগ অনলাইনে

কাগজবিহীন সেবা- রোববার থেকে দুটি জোনে, ছয় মাসের মধ্যে সব জোনে * স্থায়ী জনবল বাড়াতে হবে * আইইবি ও আইএবির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সেবা প্রাপ্তিতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সীমাহীন ভোগান্তির কথা সবার জানা। বিগত সময়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও ভোগান্তি নিরসনে কোনো সুফল আসেনি। এজন্য বর্তমান সরকার পেপারলেস (কাগজবিহীন) সেবা পদ্ধতি প্রবর্তনের কাজ শুরু করেছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, নকশা অনুমোদন ও অকুপেন্সি সনদসহ (ব্যবহার অনুমোদন) সেবা কার্যক্রম শতভাগ অনলাইনে করার ঘোষণা দিয়েছে রাজউক। রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল রোববার অবকাঠামো নির্মাণ ও নগর পরিকল্পনায় ভূমিকম্প ঝুঁকি প্রশমনে বাংলাদেশে ‘ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং (ইসিপি) সিস্টেমের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানায় রাজউক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) এবং বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে রাজউক। প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, রাজউকে বর্তমানে অনলাইনে সেবা কার্যক্রম চলমান থাকলেও সেটা কাগজবিহীন নয়। এজন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, নকশা অনুমোদন, অকুপেন্সি সনদ, বিশেষ প্রকল্প অনুমোদন সবকিছু অনলাইনে হবে। এসব কার্যক্রমে কোনো ফাইল বা কাগজের ব্যবহার হবে না। উদ্বোধনী দিন রোববার থেকেই রাজউকের জোন-৩, সাব জোন-২ (মিরপুর, সাভার, টঙ্গী) এবং জোন-৪, সাবজোন-২ (গুলশান) এলাকায় প্রাথমিকভাবে এ সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এরপরের পদক্ষেপ জোন-৬, সাবজোন-২ এ চালু করা। আগামী ৬ মাসের মধ্যে রাজউকের সব জোন এবং সাবজোনে কাগজবিহীন সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রাহকসেবার মান বৃদ্ধি এবং দুর্ভোগ কমাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসাবে রাজউকে কাগজবিহীন সেবা কার্যক্রম শুরু করা হলো। এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং জনগণের সেবা প্রাপ্তিকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি বলেন, বাসায় বসে ভবনের ছাড়পত্র, নকশা অনুমোদন, অকুপেন্সি সনদ এবং অন্যান্য সেবাপ্রাপ্তির আবেদন করে অনলাইনে ফিও পরিশোধ করা যাবে। এক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং, কার্ড ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার। তার সে স্বপ্ন তার কন্যার হাত ধরে এগিয়ে চলেছে। রাজউকের সেবা সহজ করার এ উদ্যোগও উন্নত বাংলাদেশ গঠনের পথে অগ্রগতি বলে মনে করি।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, রাজউকে কাগজবিহীন যে সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হলো এর পেছনের গল্প খুব সহজ ছিল না। প্রকল্পের শুরুতে কিছু ত্রুটির কারণে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল। পরবর্তীতে রাজউকের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ হেলালীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা নতুন করে তৎপরতা চালিয়ে এটাকে সফল করেছি। এখান থেকে জনগণ হয়রানি ছাড়া ভালো সেবা পাবে বলে বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, রাজউকে কাগজবিহীন অনলাইন সেবা চালু হওয়ায় নাগরিক দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি রাজউকের কাজ গতিশীল হবে। এ প্রক্রিয়াকে টেকসই করতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে মন্ত্রণালয়। রাজউক এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। এসব সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করব। আর এভাবেই উন্নত ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. এম শামীম জেট বসুনিয়া বলেন, বিশ্বের ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ শহরে তালিকায় প্রথম দিকে রয়েছে ঢাকা। বর্তমানে ঢাকা শহরের ভবন তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনা করা হচ্ছে না। বিল্ডিং কোড, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভবনের নকশা প্রণয়ন করেন যারা সেসব স্থপতি ও প্রকৌশলীদের জাতীয় বিল্ডিং কোড ২০২০ পড়ার অনুরোধ করছি। কেননা পুরাতন বিল্ডিং কোড এবং বিদ্যমান বিল্ডিং কোডের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ভবনের নকশা অনুমোদনের আগে ভূমিকম্পের ঝুঁকিগুলো সার্বিকভাবে বিবেচনায় অনুমোদন দিতে হবে। বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের (আইএবি) সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, রাজউকের ‘ইলেকট্রনিক্স কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিপিএস)’ ভালো উদ্যোগ। এ উদ্যোগ সফল করতে হলে রাজউকের জনবলস্বল্পতা কমাতে হবে। নিয়োগ করতে হবে নিজস্ব জনবল। সেটা করতে না পারলে কাগজবিহীন অনলাইন সেবা কার্যক্রম সফল করা কঠিন হবে। সভাপতির বক্তৃতায় রাজউক চেয়ারম্যান আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, বুড়িগঙ্গার তীরে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা শহরের নাম ঢাকা। ১৯৫৩ সাল থেকে রাজউক এই শহরের শৃঙ্খলা ও পরিকল্পিত নগর গড়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, রাজউকের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের অনেক অভিযোগ। তাদের সেসব ভোগান্তি লাঘবে কাগজবিহীন অনলাইন সেবা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি। সে লক্ষ্যে রাজউক কাজ করছে। দ্রুত সময়ে রাজউক কাঙ্খিত সুফল পাবে। রাজউকের আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের পরিচালক ও প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ হেলালী বলেন, রাজউকের কাগজবিহীন সেবা কাজের প্রয়োজনে অনেকবার জাপানে যাওয়া হয়েছে। একটানা তিন মাসও থাকা হয়েছে। সেখানে দেখেছি পাহাড়ের পাদদেশে ধনিক শ্রেণির মানুষ বসবাস করে। কিন্তু উলটো চিত্র আমাদের দেশে। একইভাবে সে দেশে ভূমিকম্পের সময় মানুষ ঘরের ভেতর প্রবেশ করে, আর আমাদের দেশের মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। কেননা নিজেদের নির্মাণাধীন ভবনের ওপর নিজেদের আস্থা নেই। রাজউকের সেবা সহজ করার পাশাপাশি দুর্যোগসহনশীল করতে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আশা করি এ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানীবাসী ইতিবাচক সুফল ভোগ করবে। অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে অংশ নেন-বিশ্বব্যাংকের দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা বিশেষজ্ঞ স্বর্ণা কাজী, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন, বাংলাদেশের (আইইবি) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন শিবলু প্রমুখ।

Source: The Daily Jugantor e-news

 

দৈনিক ইত্তেফাক । সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১

রাজউকের নকশা অনুমোদন থেকে ভবন ব্যবহারের সনদ মিলবে অনলাইনে

ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেমের উদ্বোধন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এখন থেকে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি ও কষ্ট লাঘব করতে ভবনের নকশা অনুমোদন  থেকে ভবন ব্যবহার সনদ প্রদান পর্যন্ত সব কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আবেদনকারী তার আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবে অনলাইন ও ইমেইলের মাধ্যমে। সার্ভিস গ্রহণের ফি বাবদ টাকা নিজের সুবিধাজনক যে কোনো সময়ে যে কোনো স্থান থেকে অনলাইনের মাধ্যমেই তিনি জমা দিতে পারবেন। অর্থ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সিস্টেম ছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিং (নগদ, বিকাশ, রকেট) ইত্যাদি প্ল্যাটফরম ব্যবহার করা যাবে।

গতকাল রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের আওতায় ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেমের উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়ন করছে রাজউক। গতকাল এই প্রকল্পের আওতায় আইএবি ও আইইবির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যার মাধ্যমে নকশা ও প্রকৌশলী সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হবে রাজউক। এছাড়া এই সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে তাদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। ইসিপিএস সিস্টেমে অনলাইনের মাধ্যমে বর্তমানে রাজউকের জোন-৩/২ এর গুলশান, মিরপুর, সাভার, টঙ্গী এবং জোন-৪/২ এর গুলশান এলাকার জন্য প্রাথমিকভাবে এটি চালু করা হয়েছে। এছাড়া কয়েক মাসের ভেতর পর্যায়ক্রমে রাজউকের সব জোন এবং সাব-জোনে সিস্টেমটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এই এসিপিএস পদ্ধতিটি ডেভেলপমেন্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরটিআই ইন্টারন্যাশনাল।  

গতকাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক আবদুল লতিফ হেলালী বলেন, এক সময় আমি অথরাইজ অফিসার ছিলাম। সে সময় দেখেছি নকশা অনুমোদন নিয়ে কী পরিমাণ হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়। তখন থেকে আমি অনলাইনে সফটওয়ারের মাধ্যমে এসব নিষ্পত্তির একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম। আর সেটি আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো। এর মাধ্যমে সেবাগ্রহীতার সময় ও হয়রানি কমবে। রাজউকের চেয়ারম্যান আমিন উল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, বিশ্বব্যাংকের দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ স্বর্ণা কাজী, রাজউকের সদস্য (ডেভেলপমেন্ট) মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী শামসুদ্দীন আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, এই সিস্টেমে সব অনলাইনের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা সব সেবা ঘরে বসে পাবেন। তার ফাইলের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এই প্রকল্পের অধীনে বর্তমানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) এবং নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় বাংলাদেশ ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। যার কারণে রাজউক কর্তৃক পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে দেশের দুর্যোগকালীন সহনক্ষমতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন নির্মাণের গুণগত মান উন্নয়ন করার লক্ষ্যে এই প্রকল্প কাজ করবে। এছাড়া প্রকল্পটির আওতায় মহাখালীতে একটি অত্যাধুনিক ১০ তলাবিশিষ্ট ল্যাবরেটরি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। যার জন্য আধুনিক বিভিন্ন ফিল্ড ও ল্যাবরেটরি টেস্টিং যন্ত্রপাতিও ক্রয় করা হয়েছে। প্রকল্পটির অধীনে আরবান রেজিলিয়েন্স ইউনিট গঠন ও পরিচালনা করা, প্রকৌশলী ও স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদগণের অ্যাক্রিডিটেশন প্রোগ্রাম পরিচালনা করা, ডিএমডিপি এলাকার ভূমিকম্প ঝুঁকি সংবেদনশীল ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা এবং বিএনবিসি বাস্তবায়ন ও প্রয়োগে সহায়তা করা নিশ্চিত করা হবে।

Source: The Daily Ittefaq e-news

 

দৈনিক জনকণ্ঠ । সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১

ভবন নির্মাণে ঘরে বসেই মিলবে রাজউকের সেবা

ইসিপি সিস্টেম উদ্বোধন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিড়ম্বনার কথা সবার জানা। ভবন নির্মাণে নকশা অনুমোদনসহ ভূমি সংক্রান্ত নানা কাজে মানুষকে যেতে হয় রাজউকে। এই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। এতদিন প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী নক্সা অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হতো। আবেদন সম্বলিত একটি ফাইল কতদিন নাগাদ তৈরি হবে এবং প্রক্রিয়া শুরু হবে, জানত না কেউ। ফাইল তৈরির পর শুরু হতো এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে ঘোরাঘুরি। কখনও কখনও মাঝপথেই গায়েব হয়ে যেত সেই ফাইল। বিশেষ ব্যবস্থায় আবার তা খুঁজে বের করে ছুটতে হতো এর পেছনে। কতদিনে অনুমোদিত নক্সা হাতে পাওয়া যাবে, তা বলা ছিল দুঃসাধ্য। শুধু তাই নয়, অনেক সময় প্রতারণারও শিকার হতেন গ্রাহক। নকল নক্সা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তেন পরবর্তী সময়। এই দীর্ঘসূত্রতা এবং ভোগান্তির কারণ শুধু লাল ফিতার দৌরাত্ম্য নয়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিকতাও ছিল জড়িত। গ্রাহকদের এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য বর্তমান সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চালু হয়েছে অনলাইন আবেদন এবং অনলাইনে নক্সা অনুমোদন।

এই পদ্ধতিকে আরও জনবান্ধব করতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিপিএস) প্রকল্প। এই পদ্ধতিতে ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়ায় আবেদন থেকে শুরু করে নক্সা অনুমোদন এবং সলভেন্সি সার্টিফিকেট পর্যন্ত সব কার্যক্রম সম্পন্ন হবে অনলাইনে। আবেদনকারী ঘরে বসেই এসব সেবা পাবেন। এ বিষয়ে রাজউক, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) এবং বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্বল্পতম সময়ে সকল নির্মাণ কাজের সুষ্ঠু সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদেশী সংস্থার পরামর্শে এবং দক্ষ জনবল নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এই সিস্টেমের উন্নয়ন করা হয়েছে। এটি চালু হলে ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়ার আবেদন, নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইনের মাধ্যমেই ল্যান্ড ক্লিয়ারেন্স, কনস্ট্রাকশন পারমিট, নকশা অনুমোদন, সলভেন্সি সার্টিফিকেটসহ সকল কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন হবে। আবেদনকারী সকল সেবা পাবেন ঘরে বসেই। সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য আবেদনকারীকে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে না। অনলাইনের মাধ্যমেই তিনি সব তথ্য জানতে পারবেন। বিভিন্ন সার্ভিস ফি নিজের সুবিধামতো যে কোন স্থান থেকে জমা দিতে পারবেন। অর্থ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে ব্যাংকিং সিস্টেমসহ মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমও এখানে সংযুক্ত থাকব। নক্সা অনুমোদনের ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত সব পক্ষ একসঙ্গে, এক প্ল্যাটফর্ম থেকে সেবা দেবেন। ইসিপিএস বর্তমানে পাইলটিং করার লক্ষ্যে রাজউকের জোন-৩, সাবজোন-২ ও জোন-৪ এলাকায় প্রাথমিকভাবে চালু করা হয়েছে। পরবর্তী সময় রাজউকের সব জোন ও সাবজোন এই সিস্টেমের আওতায় আসবে।ঢাকাকে একটি পরিবেশবান্ধব মহানগর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে রাজউক। সঠিক সময়ে অনলাইনের মাধ্যমেই এখন থেকে গ্রাহকরা এই সেবা পাবেন। তবে দক্ষ জনবলের অভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন যেন থেমে না যায় সেই প্রত্যাশা জনসাধারণের। দীর্ঘদিন পর রাজউকের ভোগান্তি লাঘবে সরকার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছে। কোন কারণে যেন এই সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় মানুষ।

Source: The Daily Janakantha e-news

 

দৈনিক কালেরকণ্ঠ । সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১

ঘরে বসেই মিলবে রাজউকের সেবা

রাজধানীতে নতুন কোনো ভবন নির্মাণের অনুমতি দিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। তবে এতে করে অনেক ক্ষেত্রে সেবা দিতে দেরি হচ্ছে। এ ভোগান্তি লাঘবের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিপিএস) প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এ সিস্টেমে ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া আবেদন থেকে শুরু করে সলভেন্সি সার্টিফিকেট পাওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন হবে। আবেদনকারী ঘরে বসেই সেবা পাওয়ার সুযোগ পাবে। রবিবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনাগাঁওয়ে ইসিপি সিস্টেম উদ্বোধনকালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এসব কথা বলেন। এসময় অনলাইন সেবার ওয়েবসাইট উদ্বোধন ও এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। রাজউক জানায়, অনলাইনে রাজউকের এ সেবাটি পাওয়া যাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরীফ আহমেদ বলেন, স্বল্পতম সময়ে সব নির্মাণ কাজের সুষ্ঠু সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদেশি সংস্থার পরামর্শে এবং দক্ষ জনবল নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এ সিস্টেমের উন্নয়ন করা হয়েছে। এ সিস্টেম চালু হলে ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া আবেদন থেকে শুরু করে সলভেন্সি সার্টিফিকেট পাওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন হবে। আবেদনকারী ঘরে বসেই সেবা পাওয়ার সুযোগ পাবে। নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইনের মাধ্যমেই ল্যান্ড ক্লিয়ারেন্স ও কনস্ট্রাকশন পারমিট পাওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আবেদনকারীকে তার আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে না। ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমেই তিনি সব তথ্য জানতে পারবেন। বিভিন্ন সার্ভিস ফি নিজের সুবিধাজনক সময়ে যেকোনো স্থান থেকে তিনি জমা দিতে পারবেন। এছাড়া অর্থ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে ব্যাংকিং সিস্টেমসহ মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমও এখানে সংযুক্ত থাকবে। আর নকশা ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব পক্ষই একসঙ্গে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে সেবা দেবে।

অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের (আইএবি) সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন ও বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শিবলু। আরবান রেজিলিয়েন্স শীর্ষক এ প্রকল্পটিতে রাজউক অংশে অর্থায়ন করেছে বিশ্ব ব্যাংক। এর কার্যক্রম পরিচালিত হবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে। অনুষ্ঠানে এ সময় বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাসহ প্রকল্প পরিচালক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, কর্মকর্তা, বিভিন্ন স্থপতি, প্রকৌশলী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

Source: The Daily Kalerkantha e-news